দানিয়ুব পাড়ের সহজিয়া সঙ্গী সিলকা ॥ মঈনুস সুলতান


আঁকা : সমর মজুমদার

এক.
দ্রষ্টব্য নই আমি সিলকা,
চোখে আমার দৃষ্টি লক করা নিতান্তই নিষ্প্রয়োজন,
প্লিজ ট্রাই টু আন্ডাস্ট্যান্ড-
এসকর্ট তো পেয়েছো-তোমার দেহমন হোক না হয় দয়িতের যখের ধন,
যাও ড্যান্স করো-
উতরোল হয়ে বাজছে শুন নদীপাড়ের ওপেন-এয়ার ব্যান্ড;

এখনই যেতে চাচ্ছো না ক্যাসিনোতে
ঠিক আছে থাকো না হয় আরো কিছুক্ষণ-
ভারি সুন্দর বলেছো প্রাচ্যের সহজিয়া সওদায় সজ্জিত দেবদূত,
দশক ছয়েক পাড়ি দিয়ে অপেক্ষায় আছি-
কখন গোধূলি পাঠায় বর্ণের শমন,
উপকূলে কেটেছি সাঁতার-উঠতেও হয়েছে পাহাড়ে-
তারিফ শুনেছি প্রভূত,
যা ভাবছো-বুঝতে কী পারো না-
আদতে সব বিভ্রম-বিমূর্ত.. ..মায়ামন্তর
স্বীকার করি অপরাহ্ণেও পরিত্যাগ করিনি প্রত্যাশা-
এখনো খুঁজি অকৃত্রিম অন্তর।

দুই.
মুখ ফেরাও সিলকা.. দ্যাখো.. ব্লু দানিয়ুবের উপকূলে
কৃত্রিম সরোবরে প্রতিফলিত হচ্ছে শঙ্খশুভ্র ক্যাসোল,
হাওয়া এসে লাগে তোমার রিবন বন্ধন মুক্ত চুলে-
কিংবদন্তী খ্যাত স্রোতস্বিনীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মৃদু হাসো
বাহুতে উল্কি আঁকা নারী,
মসলিনের ঊর্ণনাভে জড়িয়ে শরীর কেন হও বিলোল-
ডলফিনের উত্থানে উথলে ওঠে স্রোতনন্দিত বারি;

দেহপিঞ্জরে কী যেন দৃঢ় হতে হতে অজান্তে
হয়ে ওঠে কর্ষণপ্রিয় লাঙ্গলের ফলা,
দৃষ্টিপাত করো না তো ফের-
গোধূলির নির্জনে আমি নিরিখ করতে চাই সেজানের চিত্রকলা;

যাও-ঘুরে এসো খোলামেলা ড্রাইভে দানিয়ুব পাড়ের প্রমেনাদে
অপেক্ষা করছে এসকর্ট-
ড্রাইভওয়েতে শোফার চালিত আলফা রোমিও,
দ্রাক্ষার সোনালি নির্যাসে খুব যদি ক্লান্ত হও-
পালকের পিলো শিথানে রেখে না হয় একটু ঘুমিও;

ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে কেন ভাবছো
হয়েছে তোমার দর্পচূর্ণ-
গোধূলির বর্ণে অনুরাগের জল মিশিয়ে করতে চাই না অবমূল্যায়ন,
আমার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া নয় তেমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ
যাও ঘুরে এসো-
তোমার দৃষ্টিপাতে সবুজ হয়ে ওঠুক সাইপ্রাসের সরল বন।