দিলারা হাফিজের কবিতা নিয়ে কালির বৈশাখি বিকেল


আমরা জানি, অনুভূতি জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই কবিতার জন্ম।আর কথাসমূহের মধ্যে সবচে এগিয়ে থাকা উজ্জ্বল প্রতিভাময় কথাটিই কবিতা।যা অনুভূতির গভীর থেকে জন্ম নেয় এবং শুনতে নতুন লাগে। অর্থাৎ যা শোনা হয়নি আগে-তাই কবিতা।

গত ২০ এপ্রিল ২০২৪ সাহিত্য সংগঠন কালির ২৬তম বৈঠকে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হকের সভাপতিত্বে কবি দিলারা হাফিজের কবিতা নিয়ে বর্ণাঢ্য এক আলোচনায় মেতেছিলেন নবীন প্রবীণ কবিরা।

বিশিষ্ট কবি আবদুর রব, বরিশাল থেকে আগত কবি আসমা চৌধুরী, কবি ও অনুবাদক সাবেরা তাবাসসুম এবং সরকারি ধামরাই কলেজের অধ্যক্ষ ড. সেলিম আকন্দ।সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, দিলারা হাফিজের মতো একজন শক্তিশালী কবির এখনো যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি বলে আমরা দুঃখিত এবং লজ্জিতও।

কবি আবদুর রব বলেন, দিলারা হাফিজের মতো বহুমুখী একজন কবিকে আমরা ঠিকমতো পাঠ করিনি, তা আমাদের ব্যর্থতা। কবি রফিক আজাদের স্ত্রী বলেই বোধ করি তার প্রতি, তার কবিতার প্রতি সুবিচার করা হচ্ছে না।

কবি আসমা চৌধুরী বলেন, কবি দিলারা হাফিজকে আদ্যপান্ত পাঠ করে আমি সমৃদ্ধ হয়েছি।তার প্রেম প্রতিবাদ সবই যেন অধরাকে ধারণ করেই কবিতায় সতত প্রবহমান ভাষা ছন্দে এবং চিত্রকল্পে।

কবি সাবেরা বলেন, ৬০/৭০ বছর আগে যেসব শব্দ নারী কবিরা ব্যবহার করে নিজেকে প্রকাশ করতে সাহস পাননি।দিলারা হাফিজ সেসব ট্যাবু ভেঙে দিয়েছেন এবং অবলীলায় সেসব স্পর্শকাতর অঙ্গ কিভাবে মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছে-তা ফুটিয়ে তুলেছেন।এ কারণেই দিলারা হাফিজকে পাঠ করা আমাদের জন্যে অপরিহার্য।

কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেছেন সালমা তালুকদার, জিনাত আরা জোনাকি, ডা. ঐশীমুগ্ধ।

বলাবাহুল্য কবি দিলারা হাফিজ কবিতা লিখছেন আশির দশক থেকে।বর্তমানে এখন বাংলা ভাষাভাষী কবিদের মধ্যে অন্যতম প্রধান কবি দিলারা হাফিজ। কবিতার এই অনুর্বর সময়ে তার ভাবনা মানুষকে প্রভাবিত করছে-যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।স্বদেশপ্রেম স্বভাবনা, মুক্তিযুদ্ধ সর্বোপরি সমাজে নারীর প্রতি যে বৈষম্য, ধর্ষণ, অন্যায়, অবিচার, পৃথিবীজুড়ে যে শাদা কালোর বর্ণবাদের থাবা মনুষ্যত্বকে হীন ও নিষ্পেষিত করছে অহরহ-তার বিরুদ্ধে তার ক্ষুরধার লেখনি অব্যাহত আছে। ফিলিস্তিন শিশুদের জন্যে লিখেছেন তিনি যুদ্ধবিরোধী অসংখ্য কবিতা।

কালি সংগঠনের কর্ণধার কথাসাহিত্যিক পাপড়ি রহমান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় তার অনুপস্থিতিতে কালির নির্বাহী সদস্য লাবণ্য লিপি সঞ্চাচলনা করেছেন পুরো অনুষ্ঠান।