বিষণ্ন শহরের দহন ॥ মালেকা ফেরদৌস


সেলিনা হোসেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের বিশাল মহিরুহ।তিনি কথা সাহিত্যিকে,গবেষক ও প্রাবান্ধিক।প্রথম জীবনে তিনি কবিতাও লিখতেন।তার মেদহীন ঝরঝরে গদ্য পড়তে গিয়েও আমার মনে হয় যেন কোন কবিতার লাইন।তিনি যেমন সাবলিল বলেন তেমনি তার লেখাও সাবলিল নদীর স্রোতের মতই।শেষ পর্যন্ত পাঠককে ধরে রাখেন।

পাহাড়ে জন্মানো বার্চ, কিংবা পপলার বৃক্ষ যেমন উদ্ধত ভঙ্গিতে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে আকাশ ছুঁতে চায় তেমনি আমিও উদ্ধতবোধ নিয়েই সেলিনা আপার বই নিয়ে দুটো কথা বলব।আলোচনা বা সমালোচনা করার মতো দৃষ্টতা আমার নেই।আমি ‘হাঙর নদী গ্রেনেট, পড়েই তার ভক্ত হয়ে যাই।প্রচুর বই তিনি লিখেছেন, এখনও নিরন্তর লিখে চলছেন।

‘বিষণ্ন শহরের দহন’ ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে বেরিয়েছে।বইটি লেখকের দ্রুপদি প্রতিম সাহিত্যকর্ম।মানব চরিত্রের সাথে বিবেকের মতো শহর ও হাওয়া দুটো প্রধান চরিত্র লেখক এই গ্রন্থে সন্নিবেশ করেছেন ।
বিষণ্ন শহর আমি ক্ষয়িষ্ণু সবুজ-
মরে যাওয়া নদী যেন বিষাদের ছবি
পাঠ করতে করতে নিজেই বেরিয়ে আসি
নিজের ভেতর, শ্রম তাপিত অসহায় মানুষের
বেদনা নিশ্চল শব্দগুলো বুকে নিয়েই আমার দহন।

উপন্যাসের কেন্দ্রে এক তরুণ খুনি সুজন।স্ত্রী মুনিরা তার পরকীয়ায় বাঁধা দিয়েছে বলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।খুনের মূলে আসমা নামের এক বিবাহিতা রমনী।এই নারীকে নিয়েই মুনিরার প্রত্যাহিক দ্বন্দ্ব সংঘাত ব্যাপার হয়ে উঠেছিল সুজনের সাথে।বড় লোকের বখাটে ছেলে কিছু না চাইতেই সব পেয়ে গেছে।মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েছে ঠিকই কিন্তু কোন মানবিক বোধ তার মধ্যে জন্মায়নি।কারো বিরোধিতা সহ্য করা তার ধাতে সয়না।তাই নিজের বউকে ঢাকা থেকে দূরে এক নির্জন এলাকায় ঝোপের আড়ালে কুপিয়ে হত্যা করে।

মুনিরা ছিল এক শহীদ মুক্তিযাদ্ধার সন্তান।বিচারে সুজনের ফাঁসি হয়।কনডেম সেলে শহর সুজনের সাথে কথা বলে।কিন্তু রাগ আর চিৎকার ছাড়া সুজনের কিছু নেই ।যদিও সে মুখে বলে সে কিছুই পরোয়া করে না।কনডেম সেলে ডেপুটি জেলার রুহুল আমিন, বাশার কবির,তওবা পড়ানো হুজুর, জল্লাদ নুডু এক একটা চরিত্র যেন এক একটা অধ্যায়।এখানে শহরের একটা সংলাপ খুবই হৃদয়াগ্রহী ফাঁসি হয়ে গেলে ছেলেটিকে তার বুকের মধ্যে টেনে রাখবে।অথচ মুনীরার মৃত্যুও শহরকে ভীষণ মর্মাহত করে।

কনডেম সেলে আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করানো হয় সুজনকে ।একসময় মৌলবী আসেন তওবা পড়ান।এ সময় প্রত্যেক ফাঁসির আসামির চোখেই ভাসতে থাকে প্রিয় মানুষগুলোর মুখ।সুজনের বুকের ভেতরও জমাট বাঁধা অন্ধকার,ক্ষোভ কিন্তু কোন অনুতাপ নেই।সে তার স্ত্রী মুনীরাকে হত্যা করেছে সেজন্যও তার কোন অনুতাপ নেই।কোন ন্যায় অন্যায় বোধ তার মধ্যে কাজ করেনা।তবুও আজ মুনীরাকে মনে পড়ে।মাকে মনে পড়ে।মা তাকে ছোট বেলায় পাখি হওয়ার কথা বলতেন।

ডেপুটি জেলার।সুজনের এই নিরুত্তাপ পাশবিক চরিত্র দেখে বলেই ফেলেন- আপনাকে দেখা আমার জীবনের অভিজ্ঞতা।কনডেম সোলের জীবন যেন ঘড়ি দেখে ঘণ্টা মিনিটে বাঁধা।ফাঁসির আগে সুজন মায়ের দেওয়া সুগন্ধি সাবান দিয়ে গোসল করে।সময় মেনেই এক সময় সুজনের ফাঁসি হয়।রুদ্ধশ্বাস এ ফাঁসির কাহিনির বর্ণনায় লেখক অত্যন্ত মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।সুজনের মৃত্যুর আগে ফ্লাড লাইটের আলোকে স্নিগ্ধ চাঁদের আলোর মতো মনে হয়েছে।পৃথিবীর সুন্দরতাকে সুজন প্রথম দেখেছে।এখানে লেখক মানুষের বাঁচার আকুতিই ফুটিয়ে তুলেছেন।

ফাঁসি কার্যকর করা সেই নুডু জল্লাদের প্রতিক্রিয়া ও স্মৃতিচারণের পর শুরু হয় উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্ব।

লেখকরা অদৃশ্যকে দেখতে পান অশ্রুতকে শুনতে পান, ইন্দ্রিয়সমূহের বিপুলও সচেতন বিপর্যয় সাধনের মধ্য দিয়ে অজানায় পৌঁছতে হয় তাকে।প্রেম, দুঃখ, উন্মাদনা সব প্রেরণের মাঝে নিজেকে খোঁজেন।সব গরল আত্মসাৎ করেন।আবার পেতে হয় অকথ্য যন্ত্রণা।অলৌকিক শক্তিতে বিশ্বাসী কখনোবা মহাদুর্জন, আবার জ্ঞানের শিরোমণি।

শহর আর হাওয়ার মতো আরও একটি চারণের মতো চরিত্র সুফিয়া খাতুন।ভীষণ দুঃখী।হাওয়ার খেরো খাতায় যা লেখা হয় তা শহরকে পড়ে পড়ে শোনায়, সে খবরটিই আবার সুফিয়াকে শহর দেয়।এক প্রতিবাদী, মানবিক নারী সুফিয়া।কান্নার আর্তি হাজার বার লক্ষ বার ধ্বনিতাঁ হয়েছে অন্ধকার ও বিষণ্নতার পাঁকে পিষ্ট শহরের বুকে।

সেই বিপদ ও দগ্ধ হওয়া মানুষের গল্পই করে শহর সুফিয়ার সাথে।আর সুফিয়া শুধু কান্নার শব্দই শোনে সারা শহর জুড়ে।সুফিয়ার নেশাখোর স্বামী মাত্র ২০০০ টাকায় ওর ছোট সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে।সুফিয়া আর ঘরে ফিরে যায়নি।যেখানে কান্না সেখানেই সুফিয়া ।আসলে নিষ্ঠুরতাবোধের অনুসঙ্গই পোড়খাওয়া মানুষকেগুলোকে এমনিতেই টানে।

হাসপাতালের বাইরে সন্তান জন্ম দেয় জয়বুন।যে সন্তানের কোন পিতার নাম নেই।তার পিতৃ পরিচয়হীন সন্তান জন্মানোর দায় হসপিটাল নেয়না।হাসপাতালের নবজাতক চুরি হয়।জীবিত মেয়ে শিশু মায়ের কোলে ফিরে আসে মৃত পুত্র সন্তান হয়ে।মাঠে নবজাতক জন্ম দেন মা তার নাড়ি কাটা হয়না।মাত্র জন্ম নেওয়া পুত্র সন্তানটিসহ মা মারা যান।চারিদিকে মানুষ জমা হয় পুলিশ আসে।বিক্ষুব্ধ সুফিয়া চিৎকার করে বলে-মাইয়া মানুষের গতর হাতাইতে পারে।বাপ হইতে পারনা ক্যান ? বিদেশে গৃহকর্মী পাঠানো হয় বেশির ভাগই ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসে।তাদেরই একজন গুলবানু।ফুট ওভার ব্রিজ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে।গুম হয়ে সন্তান হারিয়ে যায়।বছরের পর বছর মা অপেক্ষা করেন।সন্তান আর মায়ের বুকে ফিরে আসেনা।মা, মেয়ে ধর্ষিত হয় প্রভাবশালীদের হাতে তারপর থেকে তারা নিখোঁজ।স্বামী মামলা করতে গেলে খুন হয় নিধুরাম ধর্ষকদের হাতেই।

সুফিয়ার কানে ঢোলের বাজনা আসে।উদগ্রীব সুফিয়াকে বাতাস জানায়।নিধুরামের কিশোর ছেলে বাবার লাশ দাহ করতে গেলে খুনিরা ছেলেটিকে মেরে অন্য গ্রামের শশ্মানে পাঠায় দাহ করতে।আর খুনির ছেলে যায় বিয়ে করতে তাই এই ঢোলের বাজনা।এতিম শিশুটির কান্না সুফিয়ার মাতৃ হৃদয় হাহাকার করে ওঠে।

মানুষ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে।টাকা দিতে না পারলে সন্তানটি আর ফিরে আসেনা।সে মায়ের আহাজারিতে সুফিয়ার বুকের ভেতর কষ্টের টর্নেডো বয়।তার সাথে দেয়ালে বসা দুটো চড়ুই পাখিও যেন কাঁদছে।সুফিয়া ওদের ভাষা বুঝতে পারে।পাথরের বুকে একটা ফড়িং বসে থাকে।কি চমৎকার অর্থবহ চিত্রকল্প।গাছের পাতারা ঝরে পড়ছে,আবার পেঁচার ডাকও ভেসে আসছে।সুফিয়া মনে করে আসলে মেয়ে মানুষ ময়লার ভাগারের মতো।

এক আশ্চর্য সময়ের সাক্ষী সুফিয়া।চারদিকে ধর্ষণের মহোৎসব চলছে।শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধাও বাদ যাচ্ছেনা কেউ।বিচারহীনতা, ক্ষমতাবানদের আস্ফালন আর অত্যাচারে কিভাবে এ দেশের চিরাচরিত সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।তার ভয়াবহ ও সকরুন বর্ণনা এই উপন্যাসটিতে আছে।

কষ্টের কাছে সবাই সমান।রুহি,তার মা,সুফিয়া,ময়না,গুলবানু,জয়বুন সবাই এক ।একজন সচেতন শিল্পী হিসেবে সেলিনা হোসেন সমকালীন অবক্ষয়িত সমাজের সময়সীমাকে অনুধাবন করে তাকেই যথাযথভাবে তার উপন্যাসে তুলে ধরেছেন।

একজন মানবিক লেখক শুধু নিজ আবহে বন্দি থাকেন না তিনি সারা বিশ্বের খবর রাখেন এবং প্রতিবাদ করেন। ধর্ষণের কথা বলতে গিয়ে তিনি পাকিস্তানের ৬ বছরের সুমাহার ধর্ষণের কথা বলেছেন।পাকিস্তানি আদালত সুমহার ধর্ষক আরমানকে চার দফা ফাঁসি দিয়েছে ।অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও সন্ত্রাসের জন্য।

ভারতে দুনিয়া কাঁপানো আসিফার ধর্ষণের কথা বলেছেন।কাশ্মীরের ৮ বছরের মেয়ে আশিফা।তাকে মন্দিরে নিয়ে ৮জন মিলে ধর্ষণ করেছে।ধর্ষণের পর পাথর দিয়ে তার মাথা থেতলে তাকে হত্যা করা হয়।দীপিকা রাওয়াত নামে একজন প্রতিবাদী নারী আইনজীবী তার পক্ষে আইনি লড়াই লড়তে গিয়ে হিন্দু একতা মঞ্চ থেকে হুমকি পান।রাওয়াতের বিরুদ্ধে জনসভায় দুজন মন্ত্রীসহ মুখ্য মন্ত্রীও ছিলেন।ভারতে ধর্ষণের প্রতিবাদ হয় লন্ডনে- ভ্যালু হিউম্যান লাইফ,নট জাষ্ট কাউস।

প্রতিটি দেশ, প্রতিটি সমাজে, প্রতিটি ব্যবস্থায় ধর্ষণকে সবচে ঘৃণ্য অপরাধ বলে ধরে নেয় হয়।এবং প্রতিটি দেশে ধর্ষণের শাস্তির বিধানও রয়েছে।চীনে ধর্ষকের ফাঁসি হয়, কার্যকরও হয় অতি দ্রুত।ইরানে সোজাসুজি গুলি।আফগানিস্থানে সোজা মাথায় গুলি,সেখানে ধর্ষণও কম হয়।ফ্রান্সে ৩০ বছর জেল।সৌদি আরবে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারা হয়।পোল্যান্ডে বুনো শুয়োরের খাঁচায় ফেলে মারা হয়।আর আমার দেশে ধর্ষক প্রকাশ্যে মহাপ্রতাপে ঘুরে বেড়ায়।

বইটিতে লারার প্রসঙ্গ এসেছে।এসেছে তার নামে সমাজকল্যাণমূলক ফাউন্ডেশনের কথা।লারা এক দুঃসাহসী কন্যার নাম।আপার নিজের মেয়ে।বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুতে সারা দেশ কেঁদেছে।আমিও কেঁদেছি।ফৌজিয়া আপার সাথে ( সাবেক লেডিস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট) তখন তার বাসায় গিয়েছিলাম।শুধু একনজর আপাকে দেখেছিলাম প্রায় আধা মৃত অবস্থায়।মাথা ও পায়ে ভিজে গামছা দিয়ে রাখা হয়েছিল।অনেক দিন সে দৃশ্য আমাকে কাঁদিয়েছে।

একবার আমরা লেডিস ক্লাব থেকে সেলিনা আপাকে সংবর্ধনা ও স্বর্ণ পদক দিয়েছিলাম।অনুষ্ঠান শেষে তাকে পৌঁছবার দায়িত্ব ছিল আমার।প্রায় দেড়ঘণ্টা সময় পেয়ে ছিলাম আপার সাথে একান্তে কথা বলার।তখন আপার কোন আত্মীয়ের মৃত্যুর কথা অনেক দুঃখ নিয়ে বলেছিলেন ।আবার একটা খুশির সংবাদও দিয়েছিলেন যে তার একটা বই ভারতের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়র পাঠ্য হয়েছে।তিনি তখন বলেছিলেন- আনন্দ বেদনার মাখামাখি নাহলে অনুভবের মুগ্ধতা গাঢ় হয়না।আপার কথাটি আজও আমি মনে রেখেছি।

বইটিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১পিলখানার নারকীয় সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডের একটা পরিবারের করুণ কাহিনির বর্ণনা আছে।বিশ্বে এটা একটা নজির।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও এতো বড়সংখ্যক সেনা অফিসার মারা যায়নি।যদিও বলা হয় সিপাহী বিদ্রোহ তবুও এ হত্যাকাণ্ড আজও রহস্যময় হয়ে আছ।এ বিদ্রোহে আমার বান্ধবী পান্নার স্বামী কর্নেল মুজিব মারা গেছেন।আমাদের লেখিকা সংঘের জেসমিন আপার ছেলে কর্নেল এনশাদ আহমদ মারা গেছেন।আমি তাদের আহাজারি দেখেছি।শুনেছি নানা লোমহর্ষক কাহিনি।

লেখক সেলিনা হোসেনের লেখার জগৎ বাংলাদেশের মানুষ তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।তার উপন্যাসে সাধারণত প্রতিফলিত হয় সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংকটের সামগ্রিকতা।এই উপন্যাসে তিনি অবক্ষয়িত সমাজের নানা দিক নিয়ে অত্যান্ত নির্ভীক কণ্ঠে কথা বলেছেন।দেশ, মাটি বিশেষ করে গন মানুষের সাথে একাত্মতা ছাড়া মহৎ ও কালজয়ী শিল্পী হওয়া যায়না।যদিনা তাদের সাহিত্য ও শিল্পকর্ম মৃত্তিকা, মানুষের শ্রম, ঘামের উষ্ণ পরশ, জীবন সংগ্রাম, কষ্ট, যন্ত্রণার রূপ না থাকে।

Art for the Sachet art. সাহিত্য ও শিল্পকলায় এই অভিধাটি সমগ্র বিশ্বের শিল্প কলার উপর অপ্রতিহত প্রভাব বিস্তার করে মানবতাবাদী শিল্পী বা লেখকরা সাধারণত মানুষকে উপেক্ষা করে কোন সাহিত্য সৃষ্টি স্বীকার করে না।

আমাদের প্রতিদিনের অস্তিত্ব হচ্ছে আনন্দের, অভাবের, যন্ত্রণার, অপকৌশলের, স্বার্থপরতার।আসলে পৃথিবীর প্রাচুর্য হচ্ছে জ্ঞানের, অর্থের এবং বিজ্ঞানের।অথচ আমরা যেন চিন্তা, চেতনাও মানবিক গুণাবলী হারাতে বসেছি।আমরা স্বপ্ন ও কল্পনায় ক্রমান্বয়ে নিঃশ্ব হতে চলেছি।