চাঁদের হাসি ॥ রেজিনা মনি


বাস দুটো ছুটে চলছে পাশাপাশি। টানা একঘণ্টা কলাবাগান আর ধানমন্ডির রাস্তায় তীব্র জ্যামে প্রায় কচ্ছপ গতিতে চলছিল।সায়েন্স ল্যাবরেটরি পার হতেই যেন অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেল রাস্তা। আর তাতেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে মিরপুর-আজিমপুর রোডের দুই কোম্পানির দুই বাসের মধ্যে। কার আগে কে পৌঁছাবে। এই সময়ে ফিরতি যাত্রী পাওয়া সমস্যা না। হাজার হাজার মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে যানবাহনের আসায়। তারপরও কেন যে বাসে বাসে কম্পিটিশন। অনেকক্ষণ জ্যাম থাকার কারণে ফিরতি পথের তেমন কোনো গাড়িই পায়নি মানুষজন। সারাদিন ভিড় ঠেলে পরিবারের জন্য শপিং করে ক্লান্ত, শ্রান্ত হয়ে একটা কিছু পাওয়ার অপেক্ষায় তির্থের কাকের মতন দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার পাশে। যাও দুই একটা সিএনজি আসে তা থামার আগেই কেউ ঝাপিয়ে পড়ে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে কোনো বাসেরও দেখা নেই। আর আসলেও শখানেক লোক দৌড়ে যাবে তার দিকে।

মেঘলা মাঝে মাঝে ভাবে এত কস্ট করে রোজা রেখে মানুষ কেন পাগলের মতন শপিংয়ের জন্য মার্কেটের পর মার্কেট ছুটে বেড়ায়?

ভাবতে ভাবতেই দেখে পাশের বাসটি যেন গায়ের ওপর উঠে আসছে এই বাসের। জানালায় জানালায় ঘষা লেগে চির চির শব্দ করে উঠলো।আতঙ্কে চিৎকার করে উঠল মেঘলাসহ কয়েকজন। ঘসা দিয়ে সাইডে একটু দমিয়ে সাঁই সাঁই করে বাসটি চলে গেলো সামনে। এই বাসের ড্রাইভারও ছাড়বার পাত্র নয়, যেন পিছিয়ে গেলে মান যাবে। পারলে বাম সাইডের রিকশাগুলোকে মারিয়ে ফুটপাতে উঠে যেতে চায়। তারপরও এগিয়ে যেতে হবে। আবারও পাশাপাশি চলে এসেছে বাস দুইটি। দুই ড্রাইভারই যেন চাচ্ছে বাস দুটোকে বিপরীত দিকে ঠেলে চাপিয়ে দিতে। অবাক ব্যাপার অনেক যাত্রীর এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই নাই। ভাবলেশহীন ভাবে ভাবছে এ আর নতুন কি! দু-একজন ড্রাইভারকে গালিগালাজ করছে। প্রচণ্ড রেসারেসির এক পর্যায়ে পাশের বাসটি এমন ভাবেএই বাসের দিকে আসছে ।

মেঘলার মনে হচ্ছে পাশের বাসটি তার উপরে উঠে যাচ্ছে। কি হতে যাচ্ছে সেকেন্ডের মধ্যে বুঝে গেল মেঘলা, মনে হলো আর মাত্র কয়েকটা মুহূর্ত, তারপর সব শেষ হয়ে যাবে…। প্রচণ্ড ভয়ে চোখ বন্ধ করে বাস থামান বাস থামান বলে চিৎকার করে যাচ্ছে মেঘলা…

[ বাকি অংশ ‌১৫ মে আপডেট হবে]