বইমেলার স্মৃতি ॥ জোবায়ের মিলন


বইমেলায় প্রচুর হাঁটি আমি।কয়েকবার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যাই। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করি।কথা বলি।গল্পে বসি।চা খাই।
বড়, ছোট বলে কোনো রেখা রাখি না।বন্ধু, বন্ধুই। চেনা, অচেনা কতজনের সঙ্গে চেনা হয়, জানা হয়।নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়, অভিজ্ঞান হয়।

সময়টা টানটান উত্তেজনার মধ্যে কাটে, আনন্দের ফল্গুধারা কলকল ঝরে।আমি উপভোগ করি।উদযাপন করি।কেন করি? জানি না।হয়ত মানুষ দেখতে আমার ভালোলাগে বলে, হয়ত মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকতে ভালোলাগে বলে, হয়ত আমি মানুষ নই বলে।

হয়ত মানুষের বিচিত্র্য ও বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য আমাকে আকৃষ্ট করে। আবেদন করে।আবার হতে পারে এই মানুষের মধ্যে আমি মানুষ খুঁজে পাই বলে।

নতুনরা, পুরনোরা, মধ্যবর্তীরা প্রাণ খুলে ঘুরে বেড়ান মেলার অঙ্গণ—আমি তাকিয়ে থাকি, দেখি এবং পুলকিত হয়—আহা, আমি কেন পারি না, আরও আরও উদার হতে, মন খোলা হতে, ডানা মেলা হতে! কেন পারি না পরাণের সঙ্গে পরাণ মিশিয়ে মিশে যেতে! এখনও কেন আমি অনেক সময় মানুষ থাকি না? ভেবে পাই না।

মানুষের পায়ের তলার ধুলি হতে ইচ্ছা করে।প্রতিটি মুখের সঙ্গে আমার মুখ মিশিয়ে দিতে সাধ জাগে।মানুষগুলোকে জড়িয়ে ধরে বলতে ইচ্ছা করে, আমাকে নেবেন, আপনাদের সঙ্গে?

মনে মনে বলে ঘুরে বেড়াই।এই উচ্চারণটি উচ্চস্বরে বলে হাত বাড়াতে পারি না।যদি পাগল বলে তাচ্ছিল্য করে! চোখে চোখে আহ্বানটি করি—আমাকে আমি বলি বারবার।আর বিলিন হয়ে যাই দেহহীন দেহে, যেখানে আমিত্বটা মুচড়ে মারি সাগ্রহে।বাঁচি অগুণতি আগত মানুষের কল্লোলে, কোলাহলে—এভাবে বাঁচতে, বেঁচে থাকতে কী যে উৎসাহ, কী যে প্রেরণা লাগে তা কি বলে শেষ করা যায়? মানুষের অবারিত সুসম আত্মার মতোই তো এর তৃপ্তি।

১৮.০২.২৪