বিকল্প প্রস্তাব ॥ মঈনুস সুলতান


অলঙ্করণ: কাজী জহিরুল ইসলাম

বিকল্প প্রস্তাব
বিবেচনা করো আমার এ বিকল্প প্রস্তাব-
বালিশের পাশে রাখো সাতটি তারার তিমির,
অবচেতনের সরোবরে পড়ে ধুমকেতুর প্রভাব
কাবালা পুরাণ হাতে নিয়েপড়ো কিছু হিব্রুকিতাব।

চিত্রকর নও তুমি তবু হাতে তুলে নাও রঙতুলি
আঁকো করোটির কোটরহীন চোখে উপগ্রহের প্রতিমা,
রিকশায় চড়ে যাচ্ছে দেখো তেঁতুল গাছের ছায়া
অতিক্রম করে যাও সৃজনের সহিষ্ণু সীমা।

নেমে যাও রেলগাড়ি থেকে নিশুতি রাতে— অজানা ইশটিশনে
তাকাও সিগনালের লোহিত সবুজ আলোয় পুরানো পুঁথির পাতায়,
প্ল্যাটফর্মে চশমা চোখে তিন দেবদূত তেপ্পান্নটি তাস সাজায়
দাঁড়িয়ে দেখো টিকিটঘরের আন্ধারে তাদের বস্তুরঙ্গ সঙ্গোপনে।

মানবজন্ম মোক্ষ কিছু নয়—চাইলে হতে পারো তুমি
গাঙ্গেয় অববাহিকায় গৌরবময় গাঙ্গচিল,
হাঁটো ছায়াপথে- কসামিক স্লোগানে মাতাও নক্ষত্রের মিছিল।

আধফোঁটা ছবি

জাগে আবছা অবয়ব—
ডার্করুমে আধফোঁটা ছবি..দেখি না অনন বিভা
জানিনা কেন তবু তৈরি হয় তূরীয় অনুভব!

দনকলসের পাপড়ি ছাওয়া আঙ্গিনায়
দেখি জানালার ইশারা,
সরোবরে ডোবা সপ্তর্ষির বোঁটা থেকে
শিউলি ঝরায় সাতটি তারা,
ফোটে না জলরঙের সম্পূর্ণ দৃশ্যপট;
তৈরি হয় মঞ্চ এক মননের নিভৃতে
দেখি না তাতে দোতারা হাতে বাউলা নট।

কাঁটালতা ক্যাকটাসে মৃত্তিকা হয় গোলাপি
কার নিরাসক্ত কাননে কেন আমি রাত্রি যাপি?
কুরে খায় অজীর্ণ স্মৃতি—বহুদিনের ব্যবহৃত বর্ণ
মোছে যায় শুভ্রতা—পারি না বলতে সামান্য এ কথা ।