মহামারির প্রভাবে শিল্পচর্চার আঙ্গিক ও প্রকাশেও নতুন ধারার উদ্ভব হবে ॥ আশান উজ জামান


বিশ্বজুড়ে চলছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ। নতুন রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সমানতালে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ইতোমধ্যে দশ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় বদলে গেছে বিশ্ব। বদলেছে মানুষের জীবনযাপন। শিল্প-সংস্কৃতিতেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। এ নিয়ে যোগসূত্রের এ আয়োজন। এবারের সাক্ষাৎকার পর্বে পড়ুন কথাসাহিত্যিক আশান উজ জামানের লেখালেখি নিয়ে।

যোগসূত্র: লকডাউনে কী পড়ছেন, কী লিখছেন?
আশান উজ জামান: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুই বাড়ি’ নামের একটা উপন্যাস পড়লাম সেদিন। বইটা কথার মতো মিষ্টি, আর প্রকৃতির মতো সহজাত। তারপর আবার পড়লাম ‘দেবযান’। অবশ করা চিন্তা, অবাক করা লেখা।

লোককথা আর ইতিহাস পড়তে পছন্দ করি খুব। খুঁজে খুঁজে তাই রূপকথা, কিংবদন্তী, মিথ এসবের যত বই আছে সংগ্রহে, বের করে পড়ছি মাঝে মাঝে। এই মুহূর্তে পড়ছি কথাসাহিত্যিক হোসেনউদ্দীন হোসেনের লেখা ‘যশোরাদ্য দেশ’।

আর আমার নতুন উপন্যাসের কাজ করছি। ফাঁকে গুছিয়ে নিচ্ছি একটা কিশোর উপন্যাসের মশলা। স্মৃতিগদ্যের একটা বই করব, টুকটাক যা মনে আসে খসড়া আকারে লিখে রাখছি তাও।

যোগসূত্র: কীভাবে কাটাচ্ছেন লকডাউনের দিনগুলো?
আশান উজ জামান: সারাবেলা বাসায়-ই থাকি। অনলাইনে পাঠদান করি। পিচ্চির সঙ্গে ক্রিকেট, ক্যারম, ও গল্প বলাবলি খেলি। কার্টুন দেখি মাঝেমাঝে। আর পড়ি, আর লিখি।

যোগসূত্র: কোভিড-১৯ শিল্প-সংস্কৃতিতে কী প্রভাব ফেলছে?
আশান উজ জামান: শিল্পসাহিত্যে করোনা মহামারি ঠিক কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা হয়তো এখনই বলা যাবে না। তবে সেটা যে সুদূরপ্রসারী হবে, তা বুঝতে পারি বেশ। আমাদের বোধের জায়গায়, বিশেষত অস্তিত্বের ও সম্পর্কের বোধে, বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। শিল্পচর্চার বিষয় ও ব্যপ্তিতে করোনার উপস্থিতি তো প্রবল হয়ে উঠেছে, এই মহামারির প্রভাবে আঙ্গিক ও প্রকাশেও নতুন নতুন ধারার উদ্ভব হবে বলে ধারণা করি। শুধু চর্চা না, শিল্পসাহিত্যের বিপণন ও রসাস্বাদনের ধরনেও কোভিড-১৯ বেশ একটা বদলের বীজ রেখে যাচ্ছে বলে মনে হয়।

যোগসূত্র: কীভাবে করোনা থেকে উত্তরণ সম্ভব?
আশান উজ জামান: থেকে যাওয়ার জন্যই সম্ভবত এসেছে করোনা, মনে হচ্ছে, আটঘাট বেঁধেই নেমেছে সে। এর প্রকোপ হয়তো কমবে, বা আমরা অভ্যস্থ হয়ে উঠব এর সঙ্গে সহাবস্থানে, তবে মোটাদাগে বলা যায়, করোনার সঙ্গেই বসবাস করতে হবে। তার মানে মাস্ক আমাদের মুখেরই একটা অংশ হয়ে যাচ্ছে। উত্তরণের প্রশ্ন তাই আসছে না, আসছে টিকে থাকার; স্বাস্থ্যবিধি ঠিকঠাক মানা ও পরিমিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাঁচার চেষ্টা করাই হয়তো উত্তর তার