লকডাউনে অলস সময় না কাটিয়ে ফ্যামিলি মুভি বানিয়েছি ॥ দীপু মাহমুদ


বিশ্বজুড়ে চলছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ। নতুন রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সমানতালে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ইতোমধ্যে দশ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় বদলে গেছে বিশ্ব। বদলেছে মানুষের জীবনযাপন। শিল্প-সংস্কৃতিতেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। এ নিয়ে যােগসূত্রের এ আয়োজন। এবারের সাক্ষাৎকার পর্বে পড়ুন কথাসাহিত্যিক দীপু মাহমুদের লেখালেখি নিয়ে।

যোগসূত্র : লকডাউনে কী পড়ছেন, কী লিখছেন?
দীপু মাহমুদ: লকডাউনে যা পড়েছি বা লিখেছি তারচেয়ে দেখেছি বেশি। প্রচুর মুভি দেখেছি। বেশিরভাগ মুভি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মানবিকতার কাহিনি। পড়ার ভেতর পাওলো কোয়েলহোর লেখা ‘দ্য অ্যালকেমিস্ট’, ‘ইলেভেন মিনিটস’, হারুকি মুরাকামির ‘হিয়ার দ্য উইন্ড সিং’, মঈনুল আহসান সাবেরের লেখা ‘খুনের আগে ও পরে’, ‘ঠাট্টা’, ফ্রানৎস কাফকার ‘দ্য ট্রায়াল’, মোস্তফা কামালের লেখা ‘১৯৭৫’ মনে পড়ছে।আরও পড়েছি। নবীন লেখকদের লেখা কয়েকটা উপন্যাস পড়লাম। এছাড়াও অনেক ছোটোগল্প, ইতিহাস আর প্রবন্ধের বই পড়েছি।

লিখেছি খুব কম। দুটো ছোটোগল্প, চারটা শিশুতোষ গল্প, একটা কিশোর উপন্যাস আর একটা সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস, একটা সায়েন্স ফিকশন গল্প।

যোগসূত্র: কীভাবে কাটাচ্ছেন লকডাউনের দিনগুলো?
দীপু মাহমুদ: ওই যে বললাম মুভি দেখে আর পড়ে লকডাউনে সময় কাটে। গান শুনি। কিছু ঘরের কাজ করি। শুরুর দিকে লকডাউনে আসবাব পরিষ্কার, থালাবাসন মাজা, ঘরমোছা, ঝাড়ু দেওয়া অভ্যাস হয়ে গেছে। তবে লকডাউনে অলস সময় না কাটিয়ে আমরা একটা ফ্যামিলি মুভি বানিয়েছি। মুভির নাম ফ্ল্যাট ৬০১। ইউটিউবে আছে। তা ছাড়া আমি বিকেলে অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে বরফপানি, কুমির তোর জলে নেমেছি, লুকোচুরি এসব খেলি। শিশুদের দিয়ে ছবি আঁকিয়ে চিত্র প্রদর্শনী করেছি। সব শিশুকে বই উপহার দেওয়া হয়েছে।

যোগসূত্র: কোভিড-১৯ শিল্প-সংস্কৃতিতে কী প্রভাব ফলেছে?
দীপু মাহমুদ: শিল্প-সংস্কৃতি হচ্ছে একটা উন্মুক্ত ব্যাপার। ঘরে আটকে সেটা হ্রস্ব হয়ে যায়। চৈত্রসংক্রান্তি, বৈশাখী মেলা, সাংগ্রাই, নবান্ন, পালা এসব কি ঘরে আটকে করার কিছু। এমনকিছু না পেয়ে মানুষের দম আটকে আসছে। কতদিন থিয়েটার নেই, কবিতা উৎসব নেই, গানের আসর নেই। সবচেয়ে বড়ো প্রভাব পড়েছে শিশুদের ওপর। তাদের সাথে আকাশের যোগাযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে একদম।

যোগসূত্র: কীভাবে করোনা থেকে উত্তরণ সম্ভব?
দীপু মাহমুদ: করোনা থেকে উত্তরণের প্রথম শর্ত হচ্ছে সবাইকে করোনার উপস্থিতি মানতে হবে। আমাদের করোনা হয় না, এমন উন্নাসিকতা দেখানো যাবে না। কেউ না মানলে তাদের মানতে বাধ্য করতে হবে। আগ্রহী মানুষ নিজে থেকে বোঝে। কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে হয়। আর যারা একেবারে রাজি হবে না তাদের বাধ্য করতে হবে। সবাই মাস্ক পরবে, নিয়মিত নিয়মমতো হাত পরিষ্কার করবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। এটা সবাই করলে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

যোগসূত্র: ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
দীপু মাহমুদ: যোগসূত্রকেও ধন্যবাদ।