ব্রুকসাইটে বৃষ্টি নামল ॥ বিতস্তা ঘোষাল


শিলং, রবীন্দ্রনাথের অস্থায়ী আবাসনে। ছবি: লেখক

শিলং পাহাড়ের প্রতি পদে ছড়িয়ে অপার বিস্ময়, কোথাও কুয়াশা কোথাও মেঘ, কোথাও রোদের ঝিকিমিকি। অনাদরে পড়ে থাকা ফুলের রং-এ চোখ ধাঁধায়। পাহাড় মার কোলে তার নিশ্চিত আশ্রয়।

ঔদ্ধত্য ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পাইনের সারি।অর্কিডের সঙ্গে নেই কোনও ঝগড়া তার।ঝরনাকে সে দিয়েছে অফুরন্ত প্রশ্রয়।

ঘন কালো মেঘের চাদর গায়ে জড়িয়ে একা মা হাঁটে।পিঠে তার আস্ত পৃথিবীর বোঝা, কাঁখে উত্তরধিকারী।বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে সর্বাঙ্গ।সে নির্বাকার, নির্বিকল্প।যেন মৌন মুনি চলেছে নির্দিষ্ট লক্ষ্য। এখানেই কোনও এক বাঁকে অমিতের সঙ্গে লাবণ্যর দেখা।

অমিত কে? লাবণ্য? জিজ্ঞেস করল গাড়ির চালক।রবীন্দ্রনাথ ওই গাছের তলায় বসে লিখত।তুমি ছবি তুলবে?
নাহ! শেষের কবিতা এখানে লেখা নয়।তবু তারা এখানে। লাবণ্যর খোঁজ আজও অমিত করে।

বাংলোর দরজা বন্ধ।ফুলে ফুলে ভরা প্রবেশ দ্বার।তার সামনে তিনি।কথার মাঝেই মেঘ এসে ঘিরে ধরল।বৃষ্টি আর মেঘের আলিঙ্গনে গাঢ় হয়ে উঠল জিৎভূম।ব্রুকসাইট রোড ঘিরে শুরু হল ঝোড়ো হাওয়ার দাপট।

আমি হেঁড়ে গলায় গান ধরলাম-পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে..
সে বলে উঠল, ‌তুমি দেখছি এই লোকটার মতোই পাগল।
হাসতে হাসতে চোখ ভরে গেল জলে।বৃষ্টি আমাকে ছুঁয়ে দাঁড়িওলা বুড়োটার সঙ্গে খেলায় ব্যস্ত।
সহসা মনে পড়ল আজ বাইশে… ।