চর মোন্তাজ ও সোনার চর ॥ মনিরুল ইসলাম


গলাচিপা যাওয়ার সময় আমাদের লঞ্চ যখন দুই বার চরে আটকালো, তখন আর বুঝতে বাকি রইলো না সময়ের অভাবে পড়তে যাচ্ছি।

শীতকালে নদীর যৌবনের উচ্ছ্বলতা কমতির দিকে থাকে তার উপর ঘন কুয়াশার চাদরে দৃষ্ট সীমা কমে আসে।এই সময়ে ডুবো চরে লঞ্চ আটকে যাওয়া প্রায় রোজকার ঘটনা।

আমাদের এবারের ছুটে চলার উদ্দেশ্য, চর মন্তাজ হয়ে সোনার চরে গিয়ে ক্যাম্প করা।সোনার চর রাঙাবালি উপজেলায় হলেও গলাচিপা হয়ে যেতে সুবিধা হয়।গলাচিপার লঞ্চ ৫টা ৩০মিনিটে টারমিনাল ছেড়ে যায়।

রাজন সদরঘাট পৌঁছানোর আগেই আমাদেরকে নিয়ে গলাচিপার দিকে রওয়ানা হয়ে গেলো আমাদের লঞ্চ এমভি আসা যাওয়া ।ঢাকা শহরের বিখ্যাত যানজটের বদলৌতে সময়মতো সদর ঘাটে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলো রাজন।পরবর্তী লঞ্চ ধরতেও ব্যর্থ হয়ে আর কোনও উপায় না দেখে পটুয়াখালীর লঞ্চে উঠে বসলাম।

লঞ্চ চরে না বাঁধলেও গলাচিপা গিয়ে রাজনের না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হতো।।ইচ্ছে ছিল আনডার চরেও যাবো। কিন্ত সময়ের অভাবে সে আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

গতানুগতিক অন্য ভ্রমণের মতো রাতে বসলো আড্ডা। আড্ডা যখন শেষ হলো রাত গড়িয়ে সকালের কাছাকাছি।বিছানায় যেতে যেতে চারটা বেজে গেলো। সকাল দশটার দিকে আমাদের লঞ্চ গলাচিপার পন্টুন এসে ভিড়লো।তার মানে প্রায় চার পিছিয়ে আছি।গলাচিপা থেকে চর মোন্তাজের ট্রলার ইতিমধ্যেই ছেড়ে গিয়েছে।

যদিও আমাদের পরিকল্পনা বোয়ালিয়া হয়ে স্পিড বোটে করে চর মোন্তাজ যাওয়া তাতে টাকা বেশি লাগলেও সময় বাঁচানো যাবে।

রাজনের এক বন্ধু আতিক, পুলিশের কর্মকর্তা। আগে থেকে মোটামুটি সব ঠিক করে রেখেছিল। ঐদিকে ঢাকা থেকে যোগযোগ করে এসেছিলাম তোফাজ্জল ভাইয়ের সাথে উনি চর মোন্তাজ থেকে সোনার চর যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন।

নাস্তা শেষ করে সময় নষ্ট না করে আগে থেকে ঠিক করা টেম্পুতে চেপে বসলাম বোয়লিয়র উদ্দেশ্যে। রাস্তা সম্পর্কে আমারদের পুর্ব কোনও ধারণা ছিল না।

কোনও রাস্তা এর চেয়ে খারাপ হতে পারে বলে আমার বলে আমার মনে হয় না। যাই হোক অনেক কষ্ট করে যখন আমরা বোয়ালিয়া স্পিড বোট ঘাটে পৌঁছালাম। ঘাটে স্পিড বোটের অস্তিত্ব নেই। আগামীকাল এখানে স্থানীয় নির্বাচন তাই পরিবহন চলাচল সীমিত। যদিও আমাদের জন্য ব্যবস্থা করা আছে। কিছুক্ষণের ভিতরেই এসে হাজির হলো আমাদের বোট। শুরু হলো চলা চর মোন্তাজের উদ্দেশ্যে।