সাদিয়া সুলতানা। কথাসাহিত্যিক। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে বই-চক্র (২০১৪), ন আকারে না (২০১৭), আমি আঁধারে থাকি (২০১৮), ঘুমঘরের সুখ-অসুখ (২০১৯), মেনকি ফান্দার অপরাধ কিংবা পাপ (২০২০)। তার নতুন উপন্যাসিকা প্রকাশিত হবে শিগগিরই। এই নতুন গ্রন্থ নিয়ে সাদিয়া সুলতানার মুখোমুখি হয়েছিল যোগসূত্র।
যোগসূত্র: আপনার নতুন গ্রন্থ আসছে। এই গ্রন্থের বিষয় কী?
সাদিয়া সুলতানা: আমার প্রকাশিতব্য উপন্যাসিকার নাম ‘ঈশ্বরকোল’। ঈশ্বরকোল দীপা নামের একটি মেয়ের শৈশব-কৈশোরের ট্রমা, সন্তানের জন্য তিতাসের ব্যাকুলতা আর উদভ্রান্ত নাহারের যাপিত জীবনের গল্প।
যোগসূত্র: এই উপন্যাসিকার চরিত্র সম্পর্কে বলুন।
সাদিয়া সুলতানা: ঈশ্বরকোলের পরিসর খানিকটা ছোট, তাই এই আখ্যানে চরিত্রের সংখ্যাও কম। এর কেন্দ্রীয় চরিত্র দীপা। এছাড়া দীপার মা নাহার, স্বামী তিতাসসহ আরও কিছু চরিত্র আছে যারা কমবেশি আখ্যানের কেন্দ্রেই অবস্থান করে।
আমরা জানি মানুষের শৈশব-কৈশোরের অনেক রঙিন সব গল্প থাকে। ঠাকুমার ঝুলির দুয়োরানি, শুয়োরানি, ঘুঁটেকুড়ানি, ডালিমকুমারের গল্প শুনতে শুনতে তাদের জীবনের ঝুলি ভরে যায় বিস্ময়, মুগ্ধতা আর অবারিত স্বপ্নে। দীপার তেমন গল্পঝুলির শৈশব নেই, পেছনে ফিরে তাকানোর মতো কোনো স্মৃতি নেই। তবু বর্তমানে দাঁড়ানো দীপাকে অতীতমুখী হতে হয়, স্মৃতির তীর্যক ফলায় পুনঃপুন আহত হতে হয়। আর দীপার স্মৃতিযাপনে একটা খয়েরি রঙা আলমারি, হলুদ ফ্রক পরা ছোটো এক মেয়ের সাথে সাথে একটা লাল রঙের ভারি হাত স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ওঠে।
আসলে ঈশ্বরকোল শুধু স্মৃতিতাড়িত দীপার গল্প নয়; জীবনতাড়িত তিতাস, নাহার, মীনারও গল্প।
যোগসূত্র: আপনার গল্পগুলো আমাদের চারপাশের জীবন আখ্যান। সেক্ষেত্রে কীভাবে আপনি গল্পের চরিত্র খুঁজে বের করেন?
সাদিয়া সুলতানা: আমি যাদের জীবনের দিকে চোখ রাখছি, আমার জীবনের দিকে যারা চোখ রাখছেন তারাই মূলত আমার ভেতরে নতুন নতুন উপলব্ধির জন্ম দিচ্ছেন। আমার কলম দিয়ে তারাই লিখিয়ে নিচ্ছেন। তাই বলবো আমাকে ঘিরে থাকা পরিবেশের গণ্ডিতেই আমি গল্পের চরিত্রসমূহের দেখা পাই। আসলে বানোয়াট কিছু লিখতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আমি প্রতিদিন যা দেখি, যাদেরকে দেখি তারাই আমার লেখার উপজীব্য হয়ে ওঠে। তবে আমার মনে হয় বাস্তব আর কল্পনা দুইয়ের নির্যাস নিঙড়েই লেখার জন্ম হয়। যা দেখছি-যা অনুভব করছি সব লিখে ফেললেই তো আর গল্প তৈরি হয় না, কতটুকু নিবো, কাহিনিসূত্রের সঙ্গে কীভাবে চরিত্রগুলোর সমন্বয় করবো সেই পরিমিতবোধটা থাকা চাই।
যোগসূত্র: নতুন কী লিখছেন?
সাদিয়া সুলতানা: আমি এখন আমার পরবর্তী উপন্যাসের খসড়া করছি। নাম জলের বিপরীতে।