প্রতীক্ষা ॥ দিলারা হাফিজ


প্রতীক্ষা

তোমার জন্যে অপেক্ষা শেষ,
এখন আমি প্রতীক্ষা এক;
আসবে তুমি কখন, বলো?
দ্রুতলয়ে স্নান সারি, কপালে টিপ, তাঁতের শাড়ি

সবকিছুতে গন্ধ মাখি
যেমন যেমন চাইতে তুমি,ষোড়শ উপচার সঙ্গে রাখি
সারা ঘরে ধূপধুনোতে জ্বালাই রাত্রি

টেবিলে সেই তোমার চেয়ার আগের মতোই আছে, ঠিক
কিন্তু বলো আমায় নিয়ে বসবে আজ কোথায় তুমি?
বুটিক লালের শার্টটি তবে পরেছো তো?

ফিরোজা নীলের কথা তুমি বলো না কেন যত,
লালেই তোমায় মানায় বেশি…

লাল যে তোমার রক্তে-তোলা ঢেউ
রণাঙ্গণের প্রিয় ব্যসন,যুদ্ধাহতের শিরার বাঁধন
কোথায় বসবো দুজনে আজ, তুমিই ভেবে বলো না গো!
সখীপুরের আম্রতলায়?

শান্ত, স্নিগ্ধ লালমাটির ঐ পাহাড় টিলায়
কান পাতলে যেখানে আজ অসংখ্য সেই পদপাতে
যোদ্ধারা আজও গর্জে ওঠে মুক্তির বন্যায়;

ওমা! জানো না বুঝি,
সুবর্ণজয়ন্তী এখন পথে-ঘাটে
তোমার আমার মধ্যখানে দুরন্ত দূর ব্যবধানে,
হোক না,তবু প্রতীক্ষা তো তোমার জন্যে,

মুমু বলে একটি ডাক দেবেই দেবে!
তাই না গো?

ভাবি আমি মাত্রাবৃত্তে

ভাবছি আমি এমন দিনে
প্রেমের কিছু কবিতা লিখি
লেবু-ফুলের মন-উড়ানো
উ-হু-হু আহা গন্ধ-মাখা

বয়সটাতে দাঁড়িয়ে পড়ি,
মোরগ-ফুল খোঁপায় খুঁজে
প্রত্ন রসে ভাবনা আঁকি-
বিরহ এসে দুইপা মেলে
দরোজা এঁটে থাক না বসে
কীইবা করি,বলি যে কাকে!

দু’চোখে আজ হারিয়ে ফেলা
দোপাটি রঙ স্বপ্ন দেখি
ধূলি-কণায় যতই খুঁজি,
আলোর ভাঁজে রক্ত-লালে
দেখিনা তাকে পলাশ ফুলে

সুর-হারানো পাখির মতো
এখনো আমি অধরা মন
পেছন-ফেরা তপস্যাতে
হারিয়ে ফেলি হৃদয়টাকে…

অলঙ্করণ: নূরুল আসাদ