বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আর নেই। বৃহস্পতিবার (১৯ মে ২০২২) ভোরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।তিনি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা।তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।পেশাগত কারণে জনপ্রিয় এই সাংবাদিক ও কলামিস্ট বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
যুক্তরাজ্যে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী নতুন দিন নামে একটি সংবাদপত্র চালু করেন। পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে তিনি সাংবাদিকতা জীবনে ‘ডানপিটে শওকত’, ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘নাম না জানা ভোরে’, ‘নীল যমুনা’, ‘শেষ রজনীর চাঁদ’ ও ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’–এর মতো ৩৫টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ নামের একটি ফিল্মও প্রযোজনা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বেও বাংলা সাহিত্যের ভুবনে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৬৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০০৯ সালে তিনি স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পদক, স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, ইউনেসকো সাহিত্য পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পদক, সংহতি আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর গাফ্ফার চৌধুরী স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান এবং ২২ বছর বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারেননি। তাঁর স্ত্রী সেলিমা চৌধুরী লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান। এই দম্পতির চার মেয়ে ও এক ছেলে।